শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২৩ অপরাহ্ন
ক্রীড়া ডেস্ক : বাংলাদেশের কোচ হতে সবার আগে ঢাকায় এসে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন রাসেল ডমিঙ্গো। দায়িত্বটাও শেষ পর্যন্ত পেলেন তিনিই। দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক এই কোচকে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের কোচ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে বিসিবি।
রোববার দুপুরে বিসিবিতে সংবাদ সম্মেলনে নতুন কোচ হিসেবে ডমিঙ্গোর নাম জানান সভাপতি নাজমুল হাসান। তার সঙ্গে দুই বছরের জন্য চুক্তি করেছে বিসিবি।
গত ৭ অগাস্ট ঢাকায় এসে সাক্ষাৎকার দিয়ে গিয়েছিলেন ডমিঙ্গো। তার উপস্থাপনায় বিসিবি সন্তুষ্ট বলে পরে জানিয়েছিলেন বিসিবি পরিচালক জালাল ইউনুস। আগামী বুধবার দলের সঙ্গে যোগ দিয়ে কাজ শুরু করবেন নতুন কোচ।
ডমিঙ্গোর নাম ঘোষণার সংবাদ সম্মেলনে বিসিবি সভাপতি জানান, জাতীয় দলের পাশাপাশি সময়-সুযোগমতো ‘এ’ দল, হাই পারফরম্যান্স দল ও অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সঙ্গেও কাজ করবেন নতুন কোচ।
প্রধান কোচ ডমিঙ্গোকে দিয়ে বাংলাদেশের কোচিং স্টাফের প্রায় সবাই এখন দক্ষিণ আফ্রিকান। ব্যাটিং কোচ নিল ম্যাকেঞ্জি ও ফিল্ডিং কোচ রায়ান কুকের মেয়াদ বেড়েছে বিশ্বকাপ শেষেই। কিছুদিন আগে নতুন বোলিং কোচের দায়িত্ব পেয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকারই শার্ল ল্যাঙ্গাভেল্ট।
দক্ষিণ আফ্রিকা জাতীয় দলেও কোচ হিসেবে একসঙ্গে কাজ করার আছে ডমিঙ্গো ও ল্যাঙ্গাভেল্টের। ডমিঙ্গো প্রোটিয়াদের দায়িত্বে থাকার সময় ল্যাঙ্গাভেল্ট ছিলেন বোলিং কোচ।
দক্ষিণ আফ্রিকার এই চারজনের বাইরে সাপোর্ট স্টাফে আপাতত আছেন ট্রেনার শ্রীলঙ্কার মারিও ভিল্লাভারায়ন ও পারফরম্যান্স অ্যানালিস্ট ভারতের শ্রীনিবাস চন্দ্রশেখরন।
কোচ হিসেবে ক্রিকেট বিশ্বে বেশ পরিচিত নাম হলেও শীর্ষ পর্যায়ে কখনোই ক্রিকেট খেলতে পারেননি ডমিঙ্গো। তার জন্ম পোর্ট এলিজাবেথে ১৯৭৪ সালে। ইস্টার্ন প্রভিন্সের বয়সভিত্তিক দলে খেলার সময়ই উপলব্ধি করে ফেলেন, ক্রিকেট খেলে বেশিদূর যেতে পারবেন না। তাই খেলা ছেড়ে দ্রুতই নাম লেখা কোচিংয়ে। ২২ বছর বয়সেই পেয়ে যান প্রথম কোচিং ডিগ্রি।
কোচ হিসেবে স্বীকৃত পর্যায়ে দায়িত্ব শুরু করেন ইস্টার্ন প্রভিন্সের বয়সভিত্তিক দলের হয়ে। পরে দায়িত্ব পান জাতীয় পর্যায়েও। ২০০৪ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশে এসেছিলেন যুব দলের কোচ হিসেবে।
ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রথম বড় দায়িত্ব পান ২০০৫ সালে। মিকি আর্থার দক্ষিণ আফ্রিকা জাতীয় দলের দায়িত্ব নেওয়ার পর ঘরোয়া ক্রিকেটের অন্যতম প্রতিষ্ঠিত দল ওয়ারিয়র্সের কোচ হন ডমিঙ্গো। কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পর ডমিঙ্গো তার দলে পরামর্শক হিসেবে এনেছিলেন গ্যারি কারস্টেনকে। দুজনের সুসম্পর্কের শুরু সেই সময় থেকেই।
ঘরোয়া ক্রিকেটে এরপর কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন সাফল্যের সঙ্গে। ২০১০ সালে দক্ষিণ আাফ্রিকা ‘এ’ দলের কোচ হিসেবে এসেছিলেন বাংলাদেশে। ২০১১ সালে গ্যারি কারস্টেন দক্ষিণ আফ্রিকা জাতীয় দলের দায়িত্ব পাওয়ার পর সহকারী হিসেবে নিয়ে আসেন ডমিঙ্গোকে।
২০১২ সালে কারস্টেনের ভার কমাতে দক্ষিণ আফ্রিকার টি-টোয়েন্টি জাতীয় দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব দেওয়া হয় ডমিঙ্গোকে। ২০১৩ সালে কারস্টেন দায়িত্ব ছেড়ে দিলেন সব সংস্করণেই জাতীয় দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব পান তিনি।
সেই দায়িত্বে ছিলেন তিনি ২০১৭ সালের অগাস্ট পর্যন্ত। মেয়াদ শেষে আবার দায়িত্ব বাড়ানোর আবেদন করলেও দক্ষিণ আফ্রিকা নতুন কোচের দায়িত্ব দেয় ওটিস গিবসনকে। ডমিঙ্গো ফিরে যান ঘরোয়া ক্রিকেটে।
এবার বাংলাদেশকে দিয়ে আবার কোচ হিসেবে ফিরলেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। ফিরলেন ভিন্ন পরিবেশ, ভিন্ন বাস্তবতায় উপমহাদেশের দলকে কোচিং করানোর চ্যালেঞ্জ নিয়ে।